ভাবসম্প্রসারণ for class ix & x

0

 ভাবসম্প্রসারণ 

1.  উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে, তিনিই মধ্যম যিনি চলেন তফাতে-


মূলভাব
যিনি ভালাে তিনি সবার সঙ্গে মিশেন। অপরদিকে, যিনি মধ্যম তিনি সর্বদা উত্তম ও অধমের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন। 
সম্প্রসারিত ভাব
একই রক্ত-মাংসের গড়া হলেও সমাজের সকল মানুষ একই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী নয়। বিবেক, বুদ্ধি, আচার-আচরণ, মেধা, চরিত্র ও কর্মসাধনার বিচারে সমাজস্থ মানুষকে সাধারণত উত্তম, মধ্যম ও অধম- এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। উত্তম মানুষ সবার কাছেই শ্রদ্ধার পাত্র। আর অধম সকলের নিকট ঘৃণার পাত্র। উত্তম ও অধমের মাঝামাঝি আর একটি বিশেষ শ্রেণি রয়েছে যাদের বলা হয় মধ্যম। উত্তম ও অধমের পরিচয় স্পষ্ট, তাদের স্বরূপও সহজবােধ্য। কিন্তু মধ্যমের স্বরূপ বুঝা সত্যিই দুরূহ।
সমাজে এদের সংখ্যা কম নয়। জগৎ সংসারে যিনি উত্তম তার চরিত্র ও আচার-আচরণ সৎ, আদর্শ ও ন্যায়নিষ্ঠ হয়ে থাকে বিধায় তিনি নিশ্চিন্তে অধমের সাথে মিশতে পারেন। তার চরিত্র অধমের প্রভাবে প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বরং উত্তমের সংস্পর্শে অধমের চরিত্র সংশােধিত হয়। নিজের স্বকীয়তা রক্ষায় পারঙ্গম বলেই অধমকে তিনি এড়িয়ে চলেন না।
কিন্তু যারা উত্তম বা অধম কোনােটিই নয়, সেই মধ্যম শ্রেণি ভােগে দ্বিধা ও সংশয়ে। মধ্যম ব্যক্তিগণ সুকৌশলে অধমের সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন। প্রকৃতপক্ষে তাদের এ ভালােমানুষির কোনাে মূল্যই নেই। আসলে উত্তম ও অধমের মাঝামাঝি অবস্থানটা অস্বচ্ছ ও বিপজ্জনক। মধ্যমদের মধ্যে সাধারণত দোষ-গুণের সংমিশ্রণ থাকে। তাদের বিশ্বাস অধমদের প্রভাবে তাদের চরিত্রও অধম হয়ে যাবে। আবার এ শ্রেণির মধ্যে আত্ম-অহমিকা প্রকটভাবে বিদ্যমান থাকে বলে উত্তমদের সাথেও মিশতে পারে না। নিজেদের স্বার্থোদ্ধারে মধ্যমরা অনেক সময় উত্তমের ছদ্মবেশ ধারণ করেন। আসল মধ্যমরা উত্তম ও অধম কারাে সাথেই চলতে পারেন না। 
মন্তব্য
মহৎ ব্যক্তিরা সমাজের মঙ্গলের জন্য সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গেই মিশেন। তারা সমাজের ত্রাণকর্তা। সমাজের মঙ্গলের জন্য তাদের যথেষ্ট প্রয়ােজন রয়েছে।

2. কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর

মূলভাব
প্রকৃতপক্ষে স্বর্গ  নরকের অবস্থান মানুষের মধ্যেই বিরাজমান। রিপুর তাড়নায় মানুষ বিবেকহীন নরকের যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। প্রেমময় ও কল্যাণময় আচরণ স্বর্গসুখ নিয়ে আসে।সম্প্রসারিত ভাব
স্বর্গ (Heaven) নরকের (Hell) অস্তিত্ব আছে পরকালে। স্বর্গে বাস করে পুণ্যবানেরা, ভােগ করে অনন্ত সুখ-শান্তি । আর নরকে বাস করে পাপাচারীরা, ভােগ করে কঠিন শাস্তি। কিন্তু এ জগতেই আমরা স্বর্গ-নরকের অস্তিত্ব প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করি। পৃথিবীর (Earth) বুকে মানুষের মাঝেও এ স্বর্গ-নরকের অবস্থান লক্ষণীয়। নিজের কর্মফলের মধ্য দিয়েই মানুষ এখানে স্বর্গ-নরকের ফল ভােগ করে। লােভ-লালসা ইত্যাদি মানুষকে অন্যায়ের পথে ঠেলে দেয়। 

অন্যায় আচরণ ও পাপাচারের ফলে সমাজে নেমে আসে ঘােরতর অন্ধকার ও চরম অশান্তি। ফলে সমাজ নরকের ক্ষুদ্র সংস্করণ হয়ে ওঠে। পক্ষান্তরে হিংসা, দ্বেষ, লােভ-লালসা অন্তর থেকে বিদূরিত করে সরল প্রাণে ঐক্য ও শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সংসারেই নেমে আসে স্বর্গীয় সুষমা ও শান্তি। মাটির পৃথিবী তখন হয়ে ওঠে স্বর্গীয় লীলা-নিকেতন। পৃথিবীর মানুষ তার কর্মফলের মাধ্যমেই স্বর্গের সুখ ও নরকের যন্ত্রণা ভােগ করে থাকে। মানুষের অপকর্মের ফল নরকযন্ত্রণা আর মহৎ কাজের ফল স্বর্গীয় আনন্দ। 
মন্তব্য
পৃথিবীর সুখ ও দুঃখ সৃষ্টি মানুষের নিজের ওপর নির্ভর করে। মানুষের আপন কর্মের ফলেই এই পৃথিবী হতে পারে স্বর্গ আবার হতে পারে নরক।

3. কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে,
দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?
মূলভাব
এ ধরার বুকে সুখ লাভ করতে হলে অবশ্যই দুঃখকে জয় করতে হয়। দুঃখকে জয় করতে না পারলে সুখ লাভ অসম্ভব।
সম্প্রসারিত ভাব
জগতে সুখ ও দুঃখ পাশাপাশি অবস্থান করে। সকল মানুষই নিরবচ্ছিন্ন সুখ লাভের প্রত্যাশী। কেউ দুঃখ চায় না। কিন্তু রাতের পরে যেমন দিন আসে, তেমনই দুঃখের পরেই সুখ আসে। সুখ পেতে হলে দুঃখকে জয় করতে হয়। দুঃখকষ্ট ছাড়া সুখের কথা কল্পনাও করা যায় না। দুঃখের দহন সহ্য করার পরেই কেবল সুখের আস্বাদ লাভ করা যায়। অতএব, সাধনা ব্যতীত সিদ্ধি লাভ করার বিকল্প নেই। পথিক যদি দীর্ঘ পথের দিকে চেয়ে নিরাশ হয়ে যায়, তাহলে তার পক্ষে সে পথ অতিক্রম করা সম্ভব হয় না। গােলাপের ডাল কাঁটায় পরিপূর্ণ। এজন্য গােলাপ তুলতে গিয়ে কাঁটার আঘাতে হাত ক্ষতবিক্ষত হওয়ার মানসিক প্রস্তূতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কাঁটার আঘাতে রক্তাক্ত হওয়ার আশঙ্কায় পিছিয়ে গেলে সুন্দর ফুল প্রাপ্তির আনন্দ লাভ থেকে তাকে বঞ্চিত হতে হবে। 
এ পৃথিবীতে বিনা ক্লেশে বা বিনা বাধায় কোনাে সৎকার্য সাধন করা যায় না। কোনাে কাজে নেমে প্রথমবারেই সফলতা আসবে এমন কোনাে নিশ্চয়তা নেই। সুতরাং একবার না পারলে শতবার চেষ্টা করতে হয়। সুখ বা আনন্দ লাভের জন্য প্রত্যেককেই অনেক দুঃখকষ্ট সহ্য করতে হয়। ঝড়-ঝঞা, দুঃখকষ্ট দেখে পিছিয়ে গেলে কোনাে কাজেই সাফল্য আসে না। দুঃখের মতাে এত বড়ো পরশপাথর পৃথিবীতে আর নেই। চেষ্টা-চরিত্রের মাধ্যমে অনেক অসাধ্য সাধন করা যায়। ধৈর্য ধরে কাজ করলে সফলতা আসবেই। কাঁটার আঘাত সহ্য করা ছাড়া যেমন ফুল সংগ্রহ করা যায় না; তেমনই দুঃখভােগ ছাড়া সুখ অর্জন করা অসম্ভব। মন্তব্য
সাফল্য অর্জনের জন্য সকল বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। দুঃখকে সাদরে বরণ করে নিতে হবে। তবেই তাে জীবনে সুখ ও সাফল্য আসবে।

4. জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর
মূলভাব

প্রতিটি জীবের মধ্যেই ঈশ্বরের (God) অস্তিত্ব বিদ্যমান। তাই জীবের প্রতি প্রেম শ্রেষ্ঠতম ইবাদত। 
সম্প্রসারিত ভাব

বিভিন্ন সমাজের মানুষ বিভিন্ন উপায়ে ঈশ্বরের বা স্রষ্টার উপাসনা করে। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য এ অবিরাম প্রচেষ্টা মানুষকে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন ধর্মের উপাসনা পদ্ধতি অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের প্রকৃত স্বরুপ বুঝতে পারা খুবই কঠিন। জগতে মনীষী ও ধর্মগুরুগণ সকলেই এ বিষয়ে একমত যে, ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের জন্য বহু দূরে যাওয়ার প্রয়ােজন নেই। 

সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব তার সৃষ্ট জীবগুলাের মধ্যেই রয়েছে বলে আমাদের তার সৃষ্ট জীবের সেবায় আত্মনিয়ােগ করতে হবে। যে লোক সব সময় আর্ত-ক্লিষ্ট ও পীড়িত মানবতা ও জীবের সেবায় রত, তিনিই ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ সেবক ও ইবাদাতকারী। কেননা, অসহায়কে সাহায্য ও সহযােগিতা করলে প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরেরই সেবা করা হয়, ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্তের মুখে অন্ন ও পানীয় তুলে দিলে সৃষ্টিকর্তারই সন্তুষ্টি বিধান করা হয়। এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ উপাসনা বা ইবাদাত পদ্ধতি এ জগতে আর নেই।
মন্তব্য
সৃষ্টির ভেতর দিয়েই স্রষ্টার প্রকাশ, তাই তার সৃষ্ট জীবকে সেবা করলে প্রকারান্তরে তাকেই সেবা করা হয়।

5. অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে

সুন্দর সমাজ গড়ার জন্য এবং সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মানুষ গড়ে তুলেছে অনুশাসন এবং ন্যায়-নীতির মানদ-। কিন্তু কিছু মানুষ রয়েছে যারা এসব ন্যায়-নীতি অমান্য করে অন্যায় ও অবৈধ কর্মতৎপরতায় লিপ্ত হয়। 
এরা সমাজের চোখে অন্যায়কারী এবং আইনের চোখে অপরাধী হিসাবে বিবেচিত। আবার যারা অন্যায়ের প্রতিবিধান বা বিরুদ্ধাচরণ করে না বরং শৈথিল্যের সাথে তা মেনে নেয়, সূক্ষ্ম বিচারে তারাও অপরাধী। 
কারণ অন্যায়ের বিচার না করলে তা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে। আমরা জানি ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। এ হিসাবে অপরাধীকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখা যেতে পারে। 
আপাতদৃষ্টিতে এমনটি মনে হলেও মনে রাখা দরকার যে, ক্ষমারও নির্দিষ্ট সীমা থাকতে হবে। তা না হলে অন্যায় বেড়ে গিয়ে সমাজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। বিবেকবান মানুষ হিসাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার চেতনার অধিকারী হলেও অনেক সময় মানুষ নানা কারণে দিনের পর দিন অন্যায়কে সহ্য করে। 
সরাসরি অন্যায় না হলেও এটি অন্যায়কে সহযোগিতা করার নামান্তর। অনেকে বিপদের ঝুঁকি থাকায় নীরবে অন্যায়কে সহ্য করে চলে। এসব প্রবণতার কারণে আজ আমাদের সমাজে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়ই সম অপরাধে অপরাধী। 
মন্তব্য
শুধুমাত্র নিজে অপরাধ না করলে সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। অন্যায়কারীকে এবং অন্যায় সহ্যকারীকে ঘৃণা করতে হবে। সমাজের বিবেকবান ও সচেতন মানুষ হিসাবে আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তাহলে আমরা দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
 6. এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি।রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

ভাবসম্প্রসারণ: শ্রেণিবিভক্ত সমাজব্যবস্থায় ক্ষমতাভােগী মুষ্টিমেয় মানুষের দ্বারা প্রতিদিন শােষিত হয়ে চলে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী মানুষ। এর ফলে শােষক শ্রেণি আরও বেশি সমৃদ্ধিশালী হয়ে ওঠে। আর সাধারণ মানুষ আরও গরিব হয়। অথচ ধনীরা যে ধনসম্পদের অধিকারী, তা তাদের প্রয়ােজনের তুলনায় অতিরিক্ত। কিন্তু ক্ষমতার মােহ যে প্রলােভনের উন্নতার জন্ম দেয়, সেখানে বঙ্গহীন হয়ে ওঠে শােষণ | ফলে মনুষ্যত্ব লাঞ্ছিত হয়, দুর্বিষহ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা। এই চাহিদা এবং শােষণের তীব্রতার সামনে প্রায়শই অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয় শ্রমজীবী মানুষকে। জীবনানন্দের ভাষায় বলতে হয়—“সে অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ। ধনীদের দ্বারা গরিবের সম্পদলাভ এবং তাদের নিঃস্ব করে দেওয়ার চেষ্টা ।

7. তাই মানব ইতিহাসের এক নষ্ট প্রাত্যহিকতা।
সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।

ভাবসম্প্রসারণ: বিশ্বভুবনে অন্য সমস্ত জীবের তুলনায় মানুষ যে শ্রেষ্ঠ, সে বিষয়ে আজ আর সন্দেহের অবকাশ মাত্র নেই। মানুষ তার বুদ্ধি, প্রজ্ঞা ও হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বপ্রকৃতির নিয়মকে কাজে লাগিয়ে ব্রতী হয়েছে তাকে নবরূপে, নবসাজে সাজাতে। কিন্তু এরই বিপরীতে মানুষ কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলেছে বিভেদ-বৈষম্যের পাঁচিল। জীর্ণ সংস্কারের বলে ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের তাড়নায় এক শ্রেণির মানুষ কিছু মানুষকে হীন দৃষ্টিতে দেখে, অবহেলা করে। কিন্তু এই পৃথিবীর সকল মানুষই মানুষ হিসেবে সমান মর্যাদার অধিকারী। ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-দেশকালের সীমার উধের্ব থাকা মনুষ্যত্বই মানুষের শ্রেষ্ঠ পরিচয়। এমনকি বিশ্বদেবতার থাকা বা না থাকাটাও নির্ভর করে মানুষের অস্তিত্বের ওপর, মানুষের ভাবনার ওপর। কেননা, মানুষেরই ‘চেতনার রঙে' চুনি রাঙা হয়ে ওঠে, গােলাপ হয় সুন্দর। এ কারণেই এ পৃথিবীতে একজন মানুষ শেষপর্যন্ত বিবেচিত হয় তার মনুষ্যত্বের দ্বারাই।

8. যারা শুধু মরে কিন্তু নাহি দেয় প্রাণ,কেহ কভু তাহাদের করেনি সম্মান।

ভাবসম্প্রসারণ: মৃত্যু মানবজীবনের অনিবার্য পরিণাম। “জন্মিলে মরিতে হবে/অমর কে কোথা কবে'—কবির এই বাণীতেও রয়েছে সেই চিরন্তন। সত্যের ইঙ্গিত। কিন্তু এই মৃত্যুর প্রকারভেদ আছে। সাধারণভাবে খেয়ে-পরে

আত্মকেন্দ্রিক জীবন কাটিয়ে যারা মরে, তাদের মৃত্যু সাধারণ ঘটনা মাত্র। সেই মৃত্যুর মধ্যে কোনাে মাহাত্ম্য নেই, নেই কোনাে গৌরবও | কিন্তু এমন অনেক মানুষ পৃথিবীতে আবির্ভূত হন, যাঁদের জীবন কোনাে-না-কোনাে মহৎ আদর্শে নিবেদিত। তারা শুধু প্রাণ ধারণই করেন না, মহৎ উদ্দেশ্যে জীবন সমর্পণ করেন। ব্যক্তিসুখ অপেক্ষা দেশের ও দশের সেবাকেই তারা বড়াে করে দেখেন। এই শ্রেণির মানুষের মৃত্যু সাধারণের মৃত্যুর থেকে আলাদা। তাদের মৃত্যু পরম গৌরবে ভূষিত | তাই তাদের দেহগত জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটলেও তারা মানুষের মনে অমর হয়ে থাকেন।




Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)